ঘোড়াঘাট উপজেলায় দামোদরপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে আশরাফুল মিয়া মাছ চাষ করে জিরো থেকে হিরো হয়েছেন বলে জানা যায়। অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন আশরাফুল মিয়া। মাছ চাষ করে জিরো থেকে হিরো হয়ে যাওয়ার গল্পটি তার জন্য একেবারেই প্রযোজ্য।
আশরাফুল মিয়ার নিজের কিছু জমিজমা চাষ এবং ১টি ছোট পুকুর থেকে ২০০০ সাল থেকে অল্পকিছু পুঁজি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন এরই এক পর্যায়ে এখন থেকে প্রায় ২২ বছর যাবত উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী ও অন্যান্য সহায়তায় নিজে¯^ একটি ছোট পুকুর পরিষ্কার করে সেখানে শুরু করেন কার্প জাতীয় মাছ চাষ।
পোনামাছের ওজন গড়ে ২০০-৭৫০ গ্রাম হিসেবে ১২-১৩ টি করে মজুদ করেন এবং ২ ধরনের চাষকালে ৬ মাস ও ১ বছর মাধ্যমে চাষবাদ ও বড় করে বাজারজাত করতে শুরু করেন। অত্যন্ত কৌশলী এবং পরিশ্রমী আশরাফুল মিয়াকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নী। একের পর এক সাফল্য এসেছে। এখন তার প্রায় ১৩.৩৬ হেক্টর বিঘা জলা বিশিষ্ট প্রায় ৯টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন। রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাস, তেলাপুইয়া, মাগুর ইত্যাদি মাছ চাষ করছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে তিনি প্রতি বছরে ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা আয় করেন । আর্থিকভাবে তিনি এখন ¯^চ্ছল এবং আশরাফুল মিয়ার মাছ চাষের সফলতার গল্প এলাকার মানুষের মুখে মুখে। আশরাফুল মিয়া জানায়, প্রতিটি মাছের ওজন প্রায় ১-৬ কেজি হয়। বর্তমানে পুকুরে ৪-৫ কেজি সাইজের মাছ ল¶্য করা যায়। তিনি আহরিত মাছগুলি জীবন্ত অবস্থায় ঘোড়াঘাট, গোবিন্দগঞ্জ, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করেন । ফলে ভোক্তাগণ গুণগতসম্পন্ন জীবন্ত মাছ ক্রয়ের সুবিধা পাচ্ছেন। আশরাফুল মিয়ার মৎস্য খামারে প্রায় ১২ জন কর্মচারী নিয়মিত কাজ করে তাদের সংসারের ¯^চ্ছলতা এনেছেন। মুলত এ শ্রমিকরাই মৎস্য বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কখন মাছের খাবার সহ কিভাবে পরিচর্যা করতে হবে সেগুলো সঠিকভাবে তদারকী করে থাকেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আব্দুল হান্নান বলেন সফল মৎস্যচাষী আশরাফুল মিয়া মাছ চাষের ক্ষেত্রে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা গ্রহণ করেছেন মৎস্য বিভাগের নিকট থেকে এবং তিনি বছরে ১৫০ মেট্রিক টন মাছ বিক্রি করেন । এই মৎস্যচাষ হিসেবে এলাকার একটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। ঘোড়াঘাট উপজেলার যারা পুকুর মালিক কিন্তু মৎস্যচাষী ছিল না তারাও তার দেখাদেখি মৎস্য চাষে ঝুঁকে পড়েছে এবং ঘোড়াঘাট মৎস্য সেক্টরে এক ধরনের নতুন বিল্পব শুরু হয়েছে এরকম আশরাফুল মিয়া যদি প্রতিটি উপজেলায় একজন করে তৈরি হতো তাহলে দেশের মৎস্য সেক্টর যে গতি এটি আরো বেগবান হতো এবং তাঁর এই উদ্যোগের ফলে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা উদ্বুদ্ধ হয়ে মাছচাষ করে বেকারত্ব দূরীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আর্থ সামাজিক অবস্থান উন্নতি ও আমিষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন বলে জানান তিনি ।